গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টায় যুক্তরাষ্ট্রের নতুন উদ্যোগ
- By Jamini Roy --
- 28 November, 2024
ইসরাইল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে যুদ্ধবিরতির চুক্তির পর এবার গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার জন্য যুক্তরাষ্ট্র সক্রিয় ভূমিকা নিতে যাচ্ছে। গতকাল বুধবার (২৭ নভেম্বর) প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সামাজিকমাধ্যম এক্সে (পূর্বে টুইটার) গাজায় নতুন করে শান্তি প্রক্রিয়া শুরু করার ঘোষণা দেন। তিনি জানান, আঞ্চলিক শক্তিগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে এই প্রচেষ্টা চালানো হবে।
বাইডেনের মতে, গাজায় যুদ্ধবিরতির এই নতুন চুক্তির মধ্যে বেশ কিছু শর্ত অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এর মধ্যে জিম্মিদের মুক্তি এবং হামাসকে ক্ষমতা থেকে সরানো অন্যতম। তিনি জানান, সামনের দিনগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র তুরস্ক, মিশর, কাতার, ইসরাইলসহ অন্যান্য আঞ্চলিক মিত্রদের নিয়ে কাজ করবে।
এই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে ইসরাইলের প্রতি শান্তি প্রক্রিয়ায় সহযোগিতার আহ্বান জানানো হবে। বাইডেনের বক্তব্য অনুযায়ী, "এই প্রক্রিয়ার মূল লক্ষ্য হলো গাজায় এমন একটি পরিস্থিতি সৃষ্টি করা, যেখানে হামাসের মতো সংগঠন ক্ষমতায় থাকবে না এবং সাধারণ মানুষ শান্তিতে বসবাস করতে পারবে।"
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লেবাননে ইসরাইল-হিজবুল্লাহ যুদ্ধবিরতিকে ইতিবাচকভাবে দেখছে হামাস। তবে গাজায় ইসরাইলের দাবি মানতে তারা অস্বীকৃতি জানিয়েছে। হামাসের মতে, ইসরাইলের দাবি মেনে নেওয়া মানে হবে "আত্মসমর্পণ করা"।
হামাসের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, তারা গাজায় লেবাননের মতো একটি শান্তি চুক্তি চেয়েছিল। তবে ইসরাইলের পক্ষ থেকে তাদের ওপর যে শর্ত চাপানো হয়েছে, তা মেনে নেওয়া সম্ভব নয়।
গাজায় ইসরাইলি হামলায় হামাসের শীর্ষ নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ার নিহত হওয়ার পর সংগঠনটি নেতৃত্ব সংকটে পড়েছে। হামাসের বাকি নেতারা বর্তমানে তুরস্ক, মিশর এবং কাতারে অবস্থান করছেন। এই পরিস্থিতিতে হামাসের উপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
ইসরাইল-হিজবুল্লাহ যুদ্ধবিরতির চুক্তি কয়েক ঘণ্টা আগেই কার্যকর হয়েছে। এই চুক্তির মাধ্যমে লেবাননের সঙ্গে ইসরাইল সীমান্তে শান্তি ফিরে এসেছে। লেবাননের এই সাফল্য গাজায় শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে একটি ইতিবাচক উদাহরণ হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য যুক্তরাষ্ট্রের এই উদ্যোগ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইতিবাচক সাড়া ফেলতে পারে। তবে চুক্তি বাস্তবায়নে ইসরাইল এবং হামাসের মধ্যে মতপার্থক্য দূর করা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গাজায় চলমান সংঘাত বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রচেষ্টা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। তবে এই প্রচেষ্টা কতটা সফল হবে, তা নির্ভর করবে ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে সমঝোতা প্রতিষ্ঠার ওপর। আঞ্চলিক শক্তিগুলোর সহযোগিতায় গাজায় শান্তি ফিরিয়ে আনা সম্ভব কিনা, তা সময়ই বলে দেবে।